রফিকুল আলম
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে অপহরণের এক বছর পর দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের ৫০ ফুট গভীর পরিত্যক্ত পানির কূপে এনজিও কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের (৪৫) মরদেহের সন্ধানে ১৭ ঘন্টা অভিযানে স্থানীয় শ্রমিক ও স্কেভেটর দিয়ে মাটি খনন করে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশ—ভারতের ফটিকছড়ি রামগড়ে গহীন জঙ্গলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) উদ্ধার প্রক্রিয়া চালায়।
বৃহস্পতিবার ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭ টায় এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শত শত মানুষ জড়ো হয়ে মরদেহ উদ্ধার প্রক্রিয়া দেখতেছিল। জানা যায়, গত বুধবার বিকেলে অপহরণের সাথে জড়িত বিল্লাল ও রাজা নামের বাগান বাজার ইউনিয়নের লালমাই এলাকার ২ যুবককে রামগড় থেকে গ্রেফতারের পর তাদের স্বীকারোক্তিতে তাদের নিয়ে সন্ধ্যায় সীমান্তের রামগড় গহীন জঙ্গলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পিবিআই টিম। স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, তথাকথিত কোটি টাকা মূল্যের তক্ষক কম মূল্যে বিক্রির নাম করে গত বছরের ২২ নভেম্বর বাবুল সিকদার (৪২) নামে এক ঠিকাদার ও এনজিও সংস্থা সেতু বন্ধনের ম্যানেজার হেলাল উদ্দিনকে (৪৩) ফটিকছড়িতে এনে অপহরণ করে। পরে অপহরণকারীরা তাদের পরিবারের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ দাবির কয়েকদিনের মাথায় অপহরণকারীরা বাবুলকে মুক্তি দিলেও এনজিও কর্মকর্তাকে অপহরণের পর হত্যা করে।
হত্যার পর লাশ ফেলা দেয়া হয়েছিলো বাংলাদেশ—ভারত সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের ৫০ ফুট গভীর পরিত্যক্ত পানির কূপে। হত্যাকান্ডের এক বছরের মাথায় ঘটনার সাথে জড়িতদের পিবিআই আটকের পর বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য। এ ঘটনায় ভুজপুর থানায় ভিকটিমের ২য় স্ত্রী কানিজ ফাতেমা পিংকী বাদী হয়ে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর একটি মামলা করলে ও গত এক বছর ধরে হেলালের কোনো খোঁজ মিলছিল না। পরে চলতি বছর মার্চ মাসে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পিবিআই সদস্যদেরা বিল্লাল নামে স্থানীয় এক যুবককে গ্রেফতার করে। পরে রাজা নামের আরো এক জনকে গ্রেফতার করে।
তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হেলালকে হত্যা ও লাশ গুমের তথ্য দেয়ার পর শুরু হয় মরদেহ উদ্ধারের তৎপরতা। অপহরণকারীদের হাতে নিহত হেলাল উদ্দিন চাঁদপুর জেলার মতলব থানাধীন খাদের গাঁও ইউনিয়নের নাগদা গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের পিবিআই পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামী আমাদের কাছে স্বীকার করেছে; তারা এই হত্যাকান্ডে জড়িত ছিলো। তাদের স্বীকারোক্তিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে