রফিকুল আলম, ফটিকছড়ি
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা সদরের “ফটিকছড়ি সদর ২০ শয্যা হাসপাতাল’’ ১ যুগ পর ও পূর্ণতা পায়নি। এ হাসপাতালটি ফটিকছড়ি পৌর এলাকা ও পার্শ্ববর্তী ৪ টি ইউনিয়নের ২ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য ৩ তলা বিশিষ্ট ২৭ টি কক্ষের ২য় ও ৩য় তলা যেন কারো পরিত্যক্ত বসত ঘরের কক্ষ। আর হাসপাতালের সামনে ৪ তলা বিশিষ্ট ২ টি কোয়াটার রয়েছে, সে গুলোও ব্যবহৃত না হবার কারনে পরিত্যক্ত ভবনে পরিনিত হয়েছে। উক্ত হাসপাতালটি বর্তমানে আইসোশেন (কোভিট-১৯)ইউনিট করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাতে স্থানীয় জনসাধারণ সারা দিয়ে যাচ্ছে। তা বাস্তবায়নের জন্য ৩ সদস্য কমিটি করা হয়েছে। শুধু হাসপাতাল নয় সামনের ২ টি কোয়াটারের মধ্যে একটি ডাক্তার ও নার্সদের জন্য রেখে অন্যটি ও আইসোলেশন করা যায়। জানা যায়,২০০৭ সালে ২৯ মার্চ সিএমএমইউ, স্বাস্থ্যা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নির্মিত হাসপাতালটির ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন, তৎকালীন তত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল(অবঃ) ডাঃ এ.এস. এম. মতিউর রহমান। নির্মাণের পর ২০০৯ সালে হাসপাতালটি চালু হয়। অথচ প্রান্তিক জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালটি নির্মাণ করা হলেও এটি এখন অনেকটা রোগীবিহীন ফাঁকা পড়ে আছে। ভবনের ৩য় তলায় প্রসূতি, রিকভারী,নার্স, ডেলিভারী, সার্জন,অপারেশন,ষ্টোর,অটোক্লেভ ও এক্লাম্পীয়া কক্ষ রয়েছে। ২য় তলায় পুরুষ ও মহিলা,নার্স ,ইপিআই,২টি অফিস ও ১ টি ষ্টোর রুম। রোগীদের ওয়ার্ডের বেডে, কবুতরের বিষ্টা,সহ ধুলা-বালিতে আচ্ছাদিত হয়ে আছে। এলোমেলো ভাবে পড়ে রয়েছে শষ্যা ও চিকিৎসা উপকরণগুলো। সে সাথে দরজা জানালা গুলোর নিম্ন মানের কাঠের কারনে ভেঙ্গে পড়েছে ও পড়ছে। তবে এক্স-রে কক্ষ থাকলে ও মেশিন নেই। অবশেষে করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালটি ব্যবহারের উপযোগি করার জন্য কোভিট- ১৯ প্রতিরোধ কমিটিরমূখ্য উপদেষ্টা সাংসদ আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর নির্দেশনা মতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সায়েদুল আরেফিনের সার্বিক তত্বাবধায়নে বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: ইলিয়াছ চৌধুরী, ডা: মোহাম্মদ আবদুল বাসেত ও ডা: জয়নাল আবেদিন মুহুরী সহ ৩ সদস্য কমিটি গঠন করা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সায়েদুল আরেফিন বলেন, পৌর সদরের এ হাসপাতাল কোভিট-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতালে রুপান্তর করতে ৬৩ ধরনের চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রয়োজন। এতে প্রায় কোটি টাকা ব্যয় হবে। তাছাড়া প্রতি মাসে আরো কয়েক লাখ টাকার প্রয়োজন হবে। তবে স্থানীয় শিল্পপতি,জনপ্রতিনিধি, সংগঠন ও এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তিরা বাস্তবায়নের জন্য আর্থিক সাহায্য ও বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রদান করছে। আশা করি বাস্তবায়ন করতে পারব। বর্তমানে উক্ত হাসপাতাল চিকিৎসা উপযোগি করার কাজ শুরু হয়েছে। বলেন,উপজেলায় করোণা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর নির্দেশে ২ টি, সরকারী ভাবে আরো ২টিসহ মোট ৪ টি আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আইসোলেশন সেন্টার গুলো হচ্ছে, মাইজভান্ডার গাউছুল আজম গাউছিয়া মাদ্রাসা, নাজিরহাটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র ভবন,নাজিরহাট ঝংকার মোড়স্থ রয়েল মাউথ আবাসিক হোটেল ও নাজিরহাট হৃদয় আবাসিক হোটেল। সাংবাদিক ও সাধারণ জনগনের জন্য উক্ত মাদ্রাসা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র ভবন এবং ,চিকিৎসক ও সরকারী কর্মকর্তা- -কর্মচারীদের জন্য উল্লিখিত ২টি হোটেল সম্পূর্ণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে,ফটিকছড়ি থানার করোনা আক্রান্ত ৮ পুলিশ সদস্য রয়েল মাউথ আবাসিক হোটেলে আইসোলেশনে রয়েছেন। এদিকে প্রাথমিক ভাবে হাসপাতালের ভিতরে ও বাহিরে পরিস্কার করা কাজ শুরু হয়েছে। ১৩ জুন শনিবার এসময় কাজের গতি দেখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সায়েদুল আরেফিন,থানার ওসি মোঃ বাবুল আকতার ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব মোঃ ইসমাইল হোসেন। এ বিষয়ে ১৪দলীয় জোট নেতা ত্বরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসক , নার্স, পুলিশসহ সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেয়ার জন্য হোটেল ব্যবহারের কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু আমার নির্বাচনী এলাকায় করোনা আক্রান্তদের সেবার জন্য মাদ্রাসা ও আবাসিক হোটেলকে আইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছে। বর্তমানে ২০ শষ্যা হাসপাতালকে কোভিট-১৯ বিশেষায়িত ৩০ শষ্যার হাসপাতালে রপান্তরের জন্য কাজ চলছে। তা বাস্তবায়িত হলে আমার প্রিয় এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। তিনি এব্যাপারে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।